Logo

অর্থনীতি    >>   শুল্ক বাড়ায় খেজুর আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে

শুল্ক বাড়ায় খেজুর আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে

শুল্ক বাড়ায় খেজুর আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে

রমজান সামনে রেখে দেশের বাজারে খেজুরের সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মূলত শুল্কহার বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা খেজুর আমদানিতে অনাগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চলতি অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে খেজুর আমদানি হয়েছে মাত্র ২,১৩৭ মেট্রিক টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

চট্টগ্রামের ফলমণ্ডির বাজারে যেখানে প্রতি বছর মিশর, দুবাই, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা খেজুরে বাজার ভরপুর থাকত, এবার সেই চিত্র একেবারে উল্টো।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগে প্রতি কেজি খেজুর আমদানিতে কোনো ভ্যাট বা ট্যাক্স আরোপ করা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে কেজি প্রতি আড়াই থেকে চার মার্কিন ডলার শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে করে একটি কন্টেইনার আমদানিতে শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা, যা আগে ছিল মাত্র আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের প্রথম চার মাসে ৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ২,১৩৭ মেট্রিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে। আর গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৪,৪১৯ মেট্রিক টন।

শুল্ক বৃদ্ধির কারণে খেজুরের বাজারেও দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে:

  • মাবরুম ও মেজদুল জাতের খেজুর: প্রতি কেজি ১,৫০০ টাকা
  • সাদাবি: প্রতি কেজি ১,০০০ টাকা
  • আজওয়া ও মাশরুক: প্রতি কেজি ৬০০ টাকা
  • সাধারণ মানের জায়েদি খেজুর: প্রতি কেজি ২৫০ টাকা

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মেসার্স আমেনা ট্রেডার্সের মালিক নূরুল আজিম মুন্না বলেন, "সরকার শুল্ক কমাবে বলে শোনা যাচ্ছে। শুল্ক কমলে খেজুর আমদানি বাড়বে।"

মেসার্স আর এন জেনারেল ট্রেডিংয়ের মালিক নূর মোহাম্মদ মনে করেন, "শুল্ক কমালে আমদানির খরচ কমবে। এতে ভোক্তারা সাশ্রয়ী দামে খেজুর কিনতে পারবেন এবং ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।"

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছোলা, খেজুর ও ডালের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো দ্রুত বন্দর থেকে খালাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে শুল্ক কমানো নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা আরও বেড়ে যায়।

সরকার শুল্ক কমানোর উদ্যোগ না নিলে, আসন্ন রমজানে খেজুরের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত খরচের চাপ বাড়বে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে শুল্কহার পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।